skip to content
Skip links

Bonik Barta – সেখ আকিজ উদ্দিনের ব্যবসায়িক নৈতিকতার সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার হবে আকিজ বশির গ্রুপ

আকিজ বশির নামে নতুন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন আকিজ গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার শেখ বশির উদ্দিন। এ নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। আলাপচারিতায় আকিজের ৭০ বছরের অগ্রযাত্রার পাশাপাশি নতুন গ্রুপের উদ্ভাবনী উদ্যোগ ও বিনিয়োগ পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বদরুল আলম

নতুন গ্রুপ তৈরির কথা বলছেন। এর প্রয়োজন মনে করছেন কেন?

আমার বাবা সেখ আকিজ উদ্দিন পঞ্চাশের দশকে ব্যবসা শুরু করেন। সেই থেকে প্রায় ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবসা করছে আকিজ গ্রুপ। আমরা দ্বিতীয় প্রজন্ম এখন ব্যবসায় আছি। গ্রুপের বৈচিত্র্যও অনেক বেশি। নিজ নিজ জায়গায় আমরা ১০ ভাইয়ের সবাই সফল। তৃতীয় প্রজন্মের কেউ কেউ এখন ব্যবসায় আসছে। তারা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষিত ও যোগ্য। সময়ের বিবর্তনে ব্যবসার যে বৈচিত্র্য এসেছে, সেটিকে ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের কাঠামোগত সমন্বয় প্রয়োজন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পারিবারিকভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ব্যবসাগুলো নেতৃত্বের জায়গায় ক্লাস্টারাইজ করে চলবে। আমার বাবা ২০০৬ সালে ইন্তেকাল করার পর আমি গ্রুপ পরিচালনার দায়িত্ব নিই। প্রায় ১৭-১৮ বছর ধরে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছি। কভিডকালে আমরা কিছু ব্যবসায়িক দুর্যোগের মধ্য দিয়ে পার হয়েছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে নতুন কাঠামো তৈরি করতে হয়েছে। আমার দ্বিতীয় প্রজন্মও ব্যবসায় আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই মনে হলো আমরা যদি নিজেদের নেতৃত্বে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি তাহলে এর ভবিষ্যৎ আরো ভালো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। পারিবারিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই নতুন গ্রুপ তৈরির প্রয়াস চালাচ্ছি।

ব্যবসায় বৈচিত্র্য আনার কথা বললেন। নতুন উদ্যোগটি এক্ষেত্রে কতটা ভূমিকা রাখবে?

আমার ধারণা এটি যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে। আমার অন্য ভাইয়েরাও বিভিন্ন ক্লাস্টার নিয়ে ব্যবসা করছেন। তারাও তাদের নিজস্ব জায়গা থেকে নেতৃত্বে বৈচিত্র্য আনবেন। ব্যবসার বৈচিত্র্য এবং নেতৃত্বের বৈচিত্র্যের সমন্বয়ে উদ্যোগগুলো উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি পাবে।

এ উদ্যোগের ফলে ব্যবসা সম্প্রসারণ কেমন হবে? কী ধরনের ব্যবসায় আপনারা যাচ্ছেন?

আমার বাবা যখন ব্যবসা শুরু করেন, তখন থেকেই তা সম্প্রসারণ হচ্ছে। আকিজের সঙ্গে ব্যবসার সম্প্রসারণ যেন সমার্থক হয়ে উঠেছে। এখনো প্রত্যেকেই সম্প্রসারণ করে যাচ্ছে। আমিও আব্বার নেতৃত্বে ১৬-১৭ বছর কাজ করেছি। উনার কাছ থেকেই প্রশিক্ষণ পেয়েছি। আমাকে দিয়েও উনি ব্যবসা সম্প্রসারণ করিয়েছেন। এর ফলে একটা সম্প্রসারণশীল চিন্তা সবসময় আমার মধ্যে রয়েছে। তবে অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট, সামষ্টিক ব্যবসায়িক সুযোগগুলোকে আমরা কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। সামনেও বর্তমান ব্যবসার প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা এবং নতুন নতুন ব্যবসায় আসার প্রচেষ্টা জারি রাখব। তাই আকিজ-বশির গ্রুপ নামে একটা নতুন আইডেন্টিটি তৈরির চেষ্টা করছি। আমার নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমন্বয় করে আমাদের যাত্রার নতুন একটা শ্রেণীকরণ বা নেতৃত্বের একটা দৃষ্টিভঙ্গির বাস্তব রূপ দেয়াই লক্ষ্য।

আকিজ বশির গ্রুপের পেছনে আপনার মূল প্রেরণা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

আমি ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবসায় জড়িত। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ব্যবসাকে এমন এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া, যেখানে সব ধরনের বিধিবিধান ও পরিবেশসম্মততার বিষয়গুলো নিশ্চিত রাখা হবে। অর্থাৎ ইনসাফের ওপর প্রতিষ্ঠিত একটা প্রতিষ্ঠান নির্মাণই আমার প্রেরণা। অনেক বেশি ধনী বা অনেক বড় কোম্পানি হওয়াটা কখনই আমার প্রেরণা না। এ রকম বিষয় কখনই আমাকে তাড়িত করে না। আমাকে যে জিনিসটা তাড়িত করে সেটা হচ্ছে, খুবই গ্রহণযোগ্য এবং সম্মানিত একটি কোম্পানি তৈরি করা। মানে আকিজ বশির নামটা শুনলে যাতে মানুষ মনে করে, এটা একটা আস্থার জায়গা। এখানে উৎপাদিত পণ্যগুলো তাদের জীবনের উপকারে লাগে। তাদের সমস্যার সমাধান করে। তাদের জীবনকে সহজ করে। এ প্রতিষ্ঠান একটা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়। মূলত আমার চিন্তা একটা ইনক্লুসিভ প্রতিষ্ঠান হওয়া। যেটি সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ, ভোক্তার কাছে দায়বদ্ধ। ভোক্তাদের সমস্যা সমাধানের অংশ হতে চাই। তাদের জীবন উন্নয়নে গুরুত্ব বহন করতে চাই। এটাই আমাকে তাড়িত করে।

গ্রুপের আওতাধীন ব্যবসাগুলো কী কী, একটু ধারণা দিন।

এ মুহূর্তে আমাদের ব্যবসা সিরামিক। আমরা টাইলস, স্যানিটারিওয়্যার, টেবিলওয়্যার, আকিজ বাথওয়্যার (ফসেট, কল, ট্যাব, শাওয়ারস)—এগুলো তৈরি করি। পলিপ্রোফার্লিন, পলিয়েস্টার ফিল্ম তৈরি করি। পার্টিক্যাল বোর্ডও তৈরি করি। খুব শিগগির মিডিয়াম ডেনসিটি ফাইবার বোর্ড (এমডিএফ) প্রডাকশনে যাচ্ছি। আমাদের অন্যতম ব্যবসা হচ্ছে পাটের ব্যবসা। চায়ের ব্যবসাও করি। এর বাইরেও কিছু ব্যবসার প্রচেষ্টায় আছি। এছাড়া আপনারা জানেন, আমাদের মালয়েশিয়ায়ও বিনিয়োগ আছে। বাংলাদেশে প্রথম আমরাই সরকার থেকে অনুমতি নিয়ে মালয়েশিয়ায় একটা কোম্পানি অধিগ্রহণ করি। সেটিও আমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন গ্রুপের অধীনে পরিচালিত।

ভোক্তারা আপনাদের প্রতি নতুন কী প্রত্যাশা করতে পারে?

দায়িত্বশীলতা ও বৈচিত্র্য—এ দুইয়ের সমন্বয়ে প্রায় ৩০ বছর ধরে নিজেকে ধীরে ধীরে যোগ্য করে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আশা করি সামনে আরো পরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত নিতে পারব। ভোক্তার চাহিদার ভিত্তিতে তাদের আরো বেশি চমত্কৃত করতে পারব এবং তাদের প্রয়োজনীয় পণ্যে ভ্যালু ক্রিয়েট করতে পারব। শুধু ভোক্তার পকেট থেকে অর্থের প্রত্যাশা নয়, বরং তাদের প্রত্যাশার অতিরিক্ত পণ্যসেবা নিশ্চিত করতে চাই। নির্ধারিত দামে পণ্যটি কেনার পর ভোক্তাসাধারণের যেন মনে হয়, পণ্যের ভ্যালু ক্রয়মূল্যের চেয়ে বেশি—এটাই আমার সবসময়ের লক্ষ্য।

বর্তমানে যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে একটা আলোচনা আসে—কতটা পরিবেশবান্ধব। সে জায়গায় আপনাদের পরিকল্পনায় কী থাকছে?

আমরা শুধু ভাবছি না, করছিও। আমাদের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই এটা উপলব্ধি করি। আগের প্রতিষ্ঠিত প্রকল্পগুলোয়ও পরিবেশের সর্বোচ্চ মান ঠিক রাখার চেষ্টা করেছি। এবং নিজেদের মানকে দেশের পরিবেশ সুরক্ষার মানদণ্ডের চেয়েও আরো অনেক ওপরে নিয়ে এসেছি। আকিজ বশির গ্রুপে আমরা পরিকল্পনা করেছি, এ বছর প্রায় ৪০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করব। এ মুহূর্তে আমরা প্রায় ১২-১৩ মেগাওয়াট নিয়ে কাজ করছি। প্রায় সাড়ে তিন-চার মেগাওয়াট এরই মধ্যে ব্যবহার হচ্ছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে এটা ১৫ মেগাওয়াটে চলে আসবে। এক বছরের মধ্যে ৪০ মেগাওয়াটে নিয়ে যেতে চাই। আমাদের পরিবেশ লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠান আছে, তার মধ্যে পার্টিক্যাল বোর্ড প্রকল্পটি এরই মধ্যে জিরো ডিসচার্জ ফ্যাসিলিটি হয়ে উঠেছে। সিরামিকে আমাদের প্রতিষ্ঠানটি সম্ভবত বাংলাদেশের বৃহত্তম। এখানে প্রচুর পানির ব্যবহার হয়। প্রচুর বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একটা বিষয় আছে। এগুলোকে সার্কুলার করার জন্য প্রচুর বিনিয়োগ করছি। চেষ্টা করছি আগামী তিন-চার বছরের মধ্যে জিরো গ্রাউন্ড ওয়াটার একটা কোম্পানি হওয়ার জন্য। চেষ্টা করছি জিরো ডিসচার্জ একটা গ্রুপ হওয়ার জন্য। এরই মধ্যে ফিল্ম প্রডাকশন ইউনিট ও পার্টিক্যাল ইউনিট জিরো ডিসচার্জ প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে। সিরামিকে আমাদের লক্ষ্য হলো জিরো গ্রাউন্ড ওয়াটার কোম্পানি হওয়া, যেখানে আমরা ভূপৃষ্ঠ থেকে কোনো পানি তুলব না। প্রতিদিন আমাদের হাজার হাজার টন পানির দরকার হয়। তাই পানির ব্যবহার, জ্বালানি উৎপাদন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত মানদণ্ড থেকে নিজেদের অনেক ওপরে নিয়ে যেতে চাই।

আকিজ বশির গ্রুপে কর্মসংস্থান কেমন হচ্ছে এবং মোট টার্নওভার সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি?

এ মুহূর্তে প্রায় ২৪ হাজার জনগোষ্ঠী আমাদের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। প্রতিদিনই এটা বাড়ছে। আর টার্নওভার এ মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে আমার ধারণা প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার ধারেকাছে হবে হয়তো।

নতুন পথচলার ক্ষেত্রে কোনো চ্যালেঞ্জ দেখেন, যেটা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে চান?

আমি মনে করি চ্যালেঞ্জ সবসময়ই থাকে। এক ধরনের চ্যালেঞ্জ হলো অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও ব্যবসার রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক। এছাড়া তুলনামূলক যে বিষয়গুলো আছে যেমন পণ্যের মূল্য, ভোক্তার প্রত্যাশা—এর সবই চ্যালেঞ্জ। প্রতিষ্ঠান পরিচালনায়ও অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সবকিছু নির্ভর করছে কোন চ্যালেঞ্জটা কখন বড় আকারে দেখা দেয় তার ওপর। তবে এ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার জন্য আমাদের অত্যন্ত দক্ষ সহকর্মীরা আছেন। সমন্বিত উদ্যোগে অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছি। আশা করি ভবিষ্যতেও একইভাবে আরো চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করব এবং নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকব।

নতুন উদ্ভাবনী কোনো উদ্যোগ আছে কি?

আমাদের মৌলিক ব্যবসা ছিল পাট। নতুন দুটি পাট কোম্পানি আমি অধিগ্রহণ করেছি। এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি সই করেছি। আমরা পাটের আইটেমগুলো সম্পর্কে আরো বেশি জানতে-বুঝতে চাই। পাটের পচন প্রক্রিয়া বোঝার চেষ্টা করছি। এটার মাইক্রোবায়োলজিক্যাল বিষয়গুলো বোঝার চেষ্টা করছি। এ বিশ্লেষণগুলোর জন্য অনেক বিনিয়োগ করছি। কিছু সুফলও পেতে শুরু করেছি। তবে এগুলো দীর্ঘমেয়াদি কর্মকাণ্ড। আশা করছি একটা নেতৃত্বের জায়গায় আসতে পারব, যেটা এ খাতে প্রয়োজন ছিল।

পাট একটা গোল্ডেন ইন্ডাস্ট্রি, যেটা বহুদিন ধরে অবহেলিত ছিল। এখানে উপযুক্ত প্রযুক্তি ও প্রক্রিয়া যুক্ত করার প্রয়োজন রয়েছে, যা আমরা শুরু করেছি। এছাড়া অন্য শিল্প প্রকল্পগুলোর দিকেও একই ধরনের উদ্ভাবনী বিষয়ে নজর রয়েছে। প্রকল্পসহ পণ্যের দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। প্রকল্পের আগে আমরা পণ্য নিয়ে চিন্তা করি। আমাদের মানসিকতা অনেক বিশ্লেষণধর্মী। গবেষণাধর্মী কাজে বেশি গুরুত্ব দিই, যার ছাপ আমাদের সব পণ্যেই দৃশ্যমান। যার কারণে আমরা সেরা ব্র্যান্ডের স্বীকৃতিও পেয়েছি।

দেশে বেশকিছু বড় ব্যবসায়িক গ্রুপ আছে, যাদের ভিত্তি পারিবারিক ব্যবসা। পারিবারিক ব্যবসার সফল অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি স্বকীয় ও স্বতন্ত্র সফল উদ্যোগ বাস্তবায়নে আপনার পরামর্শ কী?

এখানে মূল হলো উত্তরাধিকার ব্যবস্থাপনা। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠাতাকেই নেতৃত্ব দিতে হয়। আমাদের ক্ষেত্রে নেতৃত্বের শিক্ষাটা দিয়েছেন আমার বাবা। উনি আমাদের মধ্যে কিছু স্ট্রং মোরাল ভ্যালু তৈরি করতে পেরেছিলেন, যেখানে নৈতিক অবস্থানটা সর্বোচ্চ। এখনকার ভোগবাদী সমাজে যদি আমি আমার সন্তানদের ওই নৈতিক শিক্ষাটা দিয়ে যেতে পারি, তাহলে ভবিষ্যৎ পরিবর্তনগুলোর ক্ষেত্রেও নৈতিকতা সমস্যা অনেক কমিয়ে আনবে। নেতৃত্বের সংকট থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। আমার পরবর্তী প্রজন্মও ভাবতে পারে যে তাদের নেতৃত্বের স্বকীয় বৈশিষ্ট্যেই তারা উত্কর্ষ অর্জন করবে। সেক্ষেত্রে নৈতিকতা থাকলে বিশৃঙ্খলা কম হবে, সমস্যা কম হবে। তাই উত্তরসূরি প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গে নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষা দেয়াটা অত্যন্ত জরুরি, যা ভবিষ্যতে বিভিন্ন বিপদকে কমাতে সাহায্য করবে।

আকিজ বশির গ্রুপের বৈশ্বিক পদচারণা সম্পর্কে ধারণা চাচ্ছি।

বৈশ্বিক পদচারণা নির্ভর করছে প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতার ওপর। পরীক্ষামূলকভাবে হলেও মালয়েশিয়ার মাধ্যমে আকিজ বশির গ্রুপের বৈশ্বিক পদচারণা আগেই শুরু হয়েছে। কভিডকালীন দুর্যোগসহ নানামুখী সমস্যা মোকাবেলা করে আলহামদুলিল্লাহ সেই ব্যবসাটা আমরা সফলভাবে পরিচালনা করছি। তবে এখনো শিখছি। বর্তমানে সিরামিক টেবিলওয়্যার রফতানি করছি। আশা করছি এ বছর পণ্যটির সর্ববৃহৎ রফতানিকারক হব। আমাদের গ্রুপের মোট আয়ের প্রায় ৩৫-৪০ শতাংশ আসছে মূলত রফতানি বাণিজ্য থেকে, যা বস্ত্র ও পোশাকবহির্ভূত পণ্য।

আমাদের পরিচিতি মূলত পণ্য দিয়েই। আশা করি আন্তর্জাতিক বাজারে আমরা যেসব পণ্য বিক্রি করি সেগুলোর মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক সম্মান, দেশের সম্মানসহ সামগ্রিকভাবে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা পর্যায়ক্রমে বাড়াতে সক্ষম হচ্ছি। দক্ষ কর্মী বাহিনীর সক্ষমতার শক্তিতেই আমরা এটা করতে পারছি। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।

ব্যবসায় সবসময় প্রতিযোগিতার জায়গা থাকে। প্রতিযোগীদের জন্য আকিজ বশির গ্রুপের কোনো বার্তা আছে কি?

প্রতিযোগিতা সবসময় ভালো। আমি এটা পছন্দ করি। আমার বাবার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যখনই ভোগ্যপণ্য, শিল্পপণ্য যা-ই বিক্রি করেছি, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আন্তর্জাতিক কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেছি। এ অভ্যাসটা আমাদের রয়ে গেছে। প্রতিযোগিতা যদি ন্যায্য হয় তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু অন্যায্য হলে একটু মন খারাপ লাগে। অবশ্য সেই মন খারাপটাকেও আমরা শক্তিতে রূপান্তর করে কাজ করি। আমি আশা করি যে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে আরো ভালো করব।

Leave a comment

Play
Drag